পুরো বিশ্ব এখন মহামারি করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। এমন পরিস্থিতিতে সবাই চিন্তিত ও আতঙ্কিত। ঘরে বসে থাকতে থাকতে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।কারোরই কিছু ভালো লাগছে না।এই পরিস্থিতিতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিবার এক কঠিন সময় পার করছে। আর যেহেতু হঠাৎ করে স্কুলগুলো বন্ধ। তাই তাদের জীবনে ঘটেছে ছন্দপতন।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা আরও অস্থির হয়ে উঠছে। এই সঙ্কটময় সময়ে অস্তিরতা, জেদ, কান্না-এগুলো সামাল দিতে অনেকেই হয়ে পড়ছেন দিশেহারা। অনেকেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন তাদের সন্তানকে নিয়ে। ঘরে বসে থেকে দৈনন্দিন রুটিনের বাইরে বাচ্চারা হয়ে যাচ্ছে বিরক্ত। স্কুল ও থেরাপি বন্ধ থাকায় অভিভাবকদের মনে হতে পারে যে বাচ্চার উন্নতি থেমে যাচ্ছে, সামান্য অবনতিও হতে পারে – কিন্তু মনে রাখবেন বাচ্চার স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা সবার আগে।করোনা ভাইরাস এর মহামারীর সময় কোনো অবস্থাতেই থেরাপিস্টকে বাসায় এনে থেরাপি দেয়া সমুচিত হবে না।
বাচ্চার স্কুলে যোগাযোগ করে অভিভাবকরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন ।এই সময়টা কাজে লাগান। নিজের বাচ্চার কি কি সমস্যা আছে – নিজে আরো ভালো করে আবিষ্কার করুন, লিস্ট করুন, শিক্ষককে জানান । এমতাবস্থায় শিক্ষকদের পরামর্শ অনুযায়ী অভিভাবকেরা কিছু করতে পারেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
১। চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দেয়া। এই সময়ে কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয় তা শেখানো।
২। শিশুর নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন। শিশু প্রতিদিন স্কুলে যে রুটিন এ কাজ করত চেষ্টা করতে হবে বাসায় সেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে। এটা শিশুকে স্বাভাবিক থাকতে সাহায্য করবে।২। শিশুর নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন। শিশু প্রতিদিন স্কুলে যে রুটিন এ কাজ করত চেষ্টা করতে হবে বাসায় সেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে। এটা শিশুকে সাভাবিক থাকতে সাহায্য করবে।
৩। গৃহবন্দি পরিস্থিতিতে অভিভাবক দের উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। শিশুটি কে বুঝিয়ে বলতে হবে যে এই পরিস্থিতি একসময় ঠিক হয়ে যাবে। শিশু কে জোর করে কিছু করাবেন না। নতুন কিছু শিখার জন্য্ অনুপ্রেরণা দিন।
৪। অনলাইন ক্লাসগুলো ভাল করে অনুসরন করুন।
৫। শিক্ষকের দেয়া অনুশীলন গুলি যতটা সম্ভব সঠিক ভাবে সঠিক নিয়ম মেনে করার চেষ্টা করুন।৫। শিক্ষকের দিয়া অনুশীলন গুলি সঠিক ভাবে সঠিক নিয়ম মেনে করার চেষ্টা করুন।
৬। ফাইন মোটর এবং গ্রস মোটর কাজ গুলো বাসায় প্রতিদিন করান।
৭। একসাথে রঙ করুন ছবি আঁকুন ।
৮। স্কুলের রুটিন মত সেন্সরী নীড গুলো মেটানোর চেষ্টা করুন।
৯। প্রতিদিন বাসায় শিশুর সাথে খেলা করুন। মা বাবা দুই জন শিশুর সাথে মজা করে খেলুন।
১০। বাচ্চা কে সারাদিন ঘরবন্দি করে রাখবেন না। সম্ভব হলে বাচ্চাকে নিয়ে ছাদে যান। বাসার সামনে খোলা জায়গা থাকলে নিয়ে যান।
১১। বাচ্চার স্বাভাবিক ঘুম ও খাবার রুটিন মেনে চলুন। তাকে খেলা করার জন্যে পর্যাপ্ত সময় দিন।
১২। বাসার বিভিন্ন কাজে যুক্ত করুন-যেমন বিছানা গোছানো, কাপড় ভাঁজ করা, ফার্নিচার মোছা, সবজি কাটা, গাছের পরিচর্চা করা, ইত্যাদি।
১৩। না সূচক কথা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
১৪। শিশুদের সামনে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
১৫। শিশুকে তার নিজের কাজ নিজেকে করতে উৎসাহিত করুন।
১৬। শিশুদের সঙ্গে নির্দিষ্ট ও স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলুন।
১৭। সহজ ও ছোট শব্দ ব্যবহার করে নির্দেশ দিন।
১৮। বাচ্চা বার বার রেগে গেলে অথবা আচরণ পরিবরতন দেখলে তার কারণ খুঁজে বের করুন, একই সাথে শিক্ষক দের সাথে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিয়ে শিশুর চাহিদা বুঝে কাজ করুন।
প্রতিটা শিশু আলাদা হয় এবং তাদের পছন্দ-অপছন্দও হয় ভিন্ন। অভিভাবক হিসেবে আপনিই সবচেয়ে ভালো বুঝবেন তার জন্য কোনটি সঠিক। সবাই সুস্থ থাকুন ও নিরাপদ থাকুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।
লেখকঃ
সৈয়দা তাসমিয়া বীনতে জামান
স্পেশাল এডুকেটর
ফেইথ বাংলাদেশ
১/১৫ এ, ইকবাল রোড
মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
হটলাইনঃ +৮৮০১৭৮৩২৪৮৪২৩